ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায়”ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ প্রকল্পে” চলছে ব্যাপক লুটপাট

মনির আহমদ, কক্সবাজার ::
চকরিয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাস্তবায়নাধীন “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ প্রকল্প” কাজের চকরিয়া অংশে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ৫৬৫ টাকার বিণিময়ে বিদ্যুৎ সুবিধা দেবার প্রজ্ঞাপন কাগজে কলমে থাকলে ও দিতে হয় ৪-৬ হাজারের অধিক টাকা। পল্লীবিদ্যুৎ চকরিয়া জোনাল অফিসের পরিদর্শক, লাইন সংস্থাপনকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাব ঠিকাদার, ইলেক্ট্রিশিয়ান ও সংশ্লিষ্ট কতিপয় আমলা সিন্ডিকেট করে স্থানীয় যুবকদের মাধ্যমে এ টাকা উত্তোলন করছে।
পল্লীবিদ্যুতের এ ধরনের আচরনে ফুঁসে উঠছেন গ্রাহকরা। দুর্নীতি দমনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।
জানা যায়, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ প্রকল্পে লাইন পেতে হলে মিটারের ৫৬৫ টাকার স্থলে দিতে হয় ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা। এছাড়াও খাম্বা/খুটির জন্য ঘর প্রতি ২হাজার থেকে ২২শত টাকা দিতে হয়। যদি কেউ প্রতিবাদ করে তাহলে বিভিন্ন আইনের গ্যাড়াকলে ফেলে সারাজীবন যাতে বিদ্যুৎ না পায় সে ব্যবস্থা করার হুমকী দিয়ে টাকা দিতে বাধ্য করে। এমন হুমকী দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ নুরুল হুদা মনু নামক এক ইলেক্ট্রিশিয়ানের বিরোদ্ধে। ইলেক্ট্রিশিয়ান নুরুল হুদা মনু’র দাবী সে এক কথার লোক। যেমন কথা তেমন কাজ। তার ভাষায় স্বয়ং ডিজিএম ও তার কথার বাইরে যাবার ক্ষমতা নাই। এ কথা বলে কোনাখালী ইউনিয়নের পুরুত্তাখালী গ্রামের দেড় শতাধিক ঘর থেকে ঘর প্রতি ৪-৬ হাজার করে টাকা নিয়েছেন চকরিয়া পল্লী বিদ্যুতের ইলেক্ট্রিশিয়ান নুরুল হুদা মনু ওরফে মুন্নাইয়া।  এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে চকরিয়া পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম’র সাথে আলাপ করলে তিনি নুরুল হুদা মনিয়া নামের কাউকে চিনেননা বলে দাবী করে বলেন, এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম মুন্সীর সাথে আলাপ করার পরামর্শ দেন। পল্লীবিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম মুন্সী জানান, পল্লী বিদ্যুতে এক সময় নিজস্ব  ইলেক্ট্রিশিয়ান ছিল কিন্তু বর্তমানে কোন তালিকাভুক্ত নাই। তা ছাড়া ঠিকাদারের সাথে মিটার দেয়া নেয়ার মধ্যে কোন সম্পৃক্ততা নাই। তবে মিটার বাড়ীতে লেগেছে খবর পেলেই ট্রান্সফরমার উঠিয়ে সংযোগ দেয়া হয়। তবে এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিসের পরিদর্শকদের ক্লিয়ারেন্স লাগে। তবে যে যাই বলুক ইলেক্ট্রিশিয়ান মনুর
যেমন কথা তেমন কাজের ফল ও পাওয়া গেছে। টাকা না দিয়ে প্রতিবাদ করায় কোনাখালীর কয়েকটি ঘরে খুটিতো দুরের কথা বিদ্যুৎ পাওয়ার আশাই গুড়েবালি হয়েছে। এমন অভযোগ পুরুত্যাখালী বাজার এলাকার বেলাল উদ্দিন ও আলমগীরের। তারা বলেন, ৪-৬ হাজার করে টাকা নিয়েছে। কয়েজন লোক ৩ হাজার করে দিয়েছে। দাবীকৃত পুরো টাকা দিতে না পারায় বিগত ৪ মাস ধরে
সংযোগ না দিয়ে লুকিয়ে রেখেছে ৬টি ট্রান্সফরমার। ভুক্তভোগিরা আরো জানান, ইলেক্ট্রিশিয়ান মনু’ টাকা পেয়েছে বললেই সুপার ভাইজার, ডিজিএম ক্লিয়ারেন্স দেন। দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় মিটার লাগানোর ৪ মাসেও ক্লিয়ারেন্স দিচ্ছে না পরিদর্শক গোপাল দাস। তাই ট্রান্সফরমার ও উঠাচ্ছেন না ঠিকাদার। এ ভাবে চলছে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যক্রম। এ যেন দুর্নীতির মহোৎসব। এভাবে “শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” প্রকল্পের আওতায় আনার কথা বলে পল্লীবিদ্যুৎ কেন্দ্রীক, আমলা, দালাল ও ইলেক্ট্রিশিয়ানদের মাঝে গ্রাহক হয়রানির টাকার চলছে ভাগাভাগি লুটপাট।
সরে জমিনে সুবিধাভোগীদের সাথে আলাপে যা পাওয়া যায় তা নিয়ে অফিসের কর্তাদের সাথে আলাপ করলে তাঁরা যা বলেন, মনে হয় তারা ধোয়া তুলসিপাতা। কিন্তু মাঠে ময়দানে আরেক রূপ। এ যেন সর্ষেতে ভুত দেখার মত। চকরিয়া পল্লীবিদ্যুতের এ হেন
আচরনের বিরুদ্ধে ফোঁসে উঠছে গ্রাহকরা। দুর্নীতি দমনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন গ্রাহকরা। এ অফিস সংশ্লিষ্টদের বহুরূপ দেখে সচেতন মহলের প্রশ্ন!! স্বপ্নের পল্লী বিদ্যুৎ তোমার কত রং?
শেখ হাসিনার কথায় এখানে কাজ হয় না, এখানে কাজ হয় ইলেক্ট্রিশিয়ান মনোয়ার আলম মনু ওরফে মুন্নাইয়া ও ৩০ দালাল গংদের কথায়।
পল্লীবিদ্যুতের এমন আচরনে ফুঁসে উঠছেন গ্রাহকরা। দুর্নীতি দমনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।

পাঠকের মতামত: